MAFIMUSHKILL

সৌদি আরবের গ্রিন কার্ড বিস্তারিত Green Card Saudi Arabia




সৌদি আরব স্পনসরশিপ (কাপালা) সিস্টেমটি বাতিল করার দিকে দ্রুত গতিতে এগোচ্ছে, বিশেষ করে "বিশেষ বিশেষাধিকার ইকামামা" ব্যবস্থা প্রকাশের কথা গত  বুধবার 08/05/2019 সৌদি সুরা কাউন্সিল অনুমোদন করেছে।  

কাপিল ছাড়াই বিশেষ সুযোগ বা  বিশেষ অধিকার আকামা যে আকামাকে ইংরেজিতে বলা হয় (PRIVILEGE IQAMA) দেওয়ার কথা চিন্তা ভাবনা করছেন সৌদি সরকার, অনেকেই এই আকামাকে অ্যামেরিকান গ্রিন কার্ডের মতই বলে বেড়াচ্ছে।






দর্শক আমরা সবাই জানি এতদিন ধরে এখনো যে টা চলে আসছে সৌদি আরবে ব্যাবসা বাণিজ্য করতে গেলে প্রবাসিরা নিজের নামে কিছু ই করতে পারেন না, সব কিছু ই সৌদি দের নামে করতে হয়, আর এতে করে আমরা প্রবাসীরা অনেক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছি।  সতকরা ৯০% লোকই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কাপিল বা স্পন্সরের কারনে, মাসে মাসে কাপালার নামে আমেল থেকে যে চাঁদা খেয়ে আসছে, সুযোগ মতে এই চাদার পরিমাণ ও দিগুণ করে দিচ্ছেন, এই মাসিক চাঁদা নিয়মিত দিতে না পারলে অনেক শ্রমিককে হুরুব অথবা বিনা কারণে জেল খেঠে দেশে ফিরত যেতে হচ্ছে।

কারো গাড়ি কারো দোকান পাট কারো কারো পুরু ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান ই নিয়ে গেছেন লোভী  সৌদি মালিকেরা, এমন শুনা যায় কারো কারো স্ত্রি কে নিয়ে গিয়ে আমেল কে জেল খাটিয়ে দেশে পাঠিয়ে দিয়েছেন।
সরকার এই আকামার নাম দিয়েছেন আকামা মমিজ্জাহ।

২০১৬ সালে এই স্কিম টা শুরু হয়েছিল।
  যা কিনা আড়াই বছর ধরে প্রসেসিং অবস্থায় ছিল। এই খবরটা ঐ সময় সাধারন পাব্লিকের মধ্যে তেমন সাড়া জাগাতে পারে নি। প্রবাসীরা এ গ্রিন কার্ডরে কথা প্রায় ভুলতে বসেছিল। কিন্তু গত ৮ ই মে ২০১৯ সালে সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে সুরা সদস্যের এক বৈঠকে এই প্রসেস টা কে দ্রুত কার্যকর করতে তাগিদ দেন যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। 
   
যখন এই সিস্টেম টা চালু হয়ে ছিল তখন এর নাম ছিল গ্রিন কার্ড সিস্টেম। আর এখন ১৪-০৫-২০১৯ তারিখে সৌদি আরবের আর এক সুরা সদস্যের বৈঠকে এই গ্রিন কার্ড সিস্টেম কে নতুন আরবি নাম ঘোষণা করে নাম দিয়েছেন আকামায়ে মমিজ্জাহ।
এই নতুন সিস্টেম অনুযায়ি সৌদি আরবের কাপালত সিস্টেম হয়ত পুরু পুরী বন্ধ হয়ে যাবে, এবং দুই ধরনের আকামার মাধ্যমে কাপিল ছাড়াই সরাসরি সৌদি সরকারের মাধ্যমে আকামা রেনিউ করা যাবে। দুই ধরনের আকামার মধ্যে একটি হবে পার্মানেন্ট সিস্টেম আর অপর টি হবে নর্মাল আকামা।
   
৯০ লাখ প্রবাসী সৌদি শ্রমিকের জন্য এটা আসলেই একটা সু সংবাদ।    
আমি জানি আমার এই খবর টা অনেকেই বিশ্বাস করবেন না, আড়াই বছর আগে যখন ভিজিট ভিসা বাংলাদেশের জন্য চালু হয়েছিল। আমার এক টা ব্লগ সাইটে শেয়ার করার সাথে সাথে কত ধরে খারফ গালি আর মন্তব্যে পেতে হয়েছিল দেখেন- এখনো কিছু কমেন্ট ঐ খানে আছে।          
এখন শুনা যাছছে আগামী ৩ মাসের মধ্যেই এর কার্যক্রম শুরু হবে।

আকামা মমিজ্জা বা এই গ্রিন কার্ড ধারী ব্যাক্তি কি কি সুবিধা ভোগ করতে পারবেন সৌদি আরবে আসুন জেনে নেওয়া যাক   
যদিও সৌদি গ্রীন কার্ড মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য দেশের মতো সৌদি নাগরিকত্বের অধিকার গ্রহনের স্বীকৃতি দেয় না,

তবে অনেক গুলি সুবিধা গ্রহনের সুযোগ দিবে আপনাকে।
·         স্থায়ী বাসস্থানের নিচ্চয়তা

·         একটি বাড়ি এবং রিয়েল এস্টেটের মালিকানা

·         ব্যবসা মালিকানাধীন- নিজের নামে ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান খোলা। 

·         সরকারী কর্মচারিদের ন্যায় পেনশন প্রাপ্তি। 

·         বেকারত্বের বিরুদ্ধে বীমা প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ

·         উদ্যেগতা হিসাবে আন্দোলনের স্বাধীনতা

·         সরকারি হাসপাতালগুলিতে শিক্ষা ও চিকিৎসা সেবা ও চাকরীর ব্যবস্থা।

·         পরিবারের ভিসা ইস্যু করা (প্রথম শ্রেণীর আত্মীয়)যেমন মা বাবা ভাই বোন। 
·         দ্বিতীয় শ্রেণীর পরিবারের জন্য ভিসা ইস্যু প্রদান করা।

·         গার্হস্থ্য কর্মীদের জন্য দুটি ভিসা ইস্যু করা/ কাজের লোক নিয়োগ  
·         সৌদি আরবের বাহিরে যে কোন সময় যাওয়া আসা করা/ এক্সিট রি এন্ট্রি যখন তখন
  
·         যে কোন ধরনের গাড়ি খরিদ ও বিক্রি করা 
·         সঠিক কাজের মাধ্যমে অতিরিক্ত পয়েন্ট যোগ করে সৌদি আরবের জাতীয়তা ও অর্থনৈতিক সিস্টেমে নিজের অধিকার সৃষ্টি করা।   


এই গ্রিন কার্ড বা আকামায়ে মমিজাহ কি ভাবে আপনি পেতে পারেন, মানে কি কি শর্তে সৌদি সরকার আপনাকে এই আকামায়ে মমিজাহ দিবে।
প্রদানের জন্য ছয়টি শর্ত নিম্নরূপ:
1 .  একটি বৈধ/ভ্যালিড পাসপোর্ট থাকতে হবে।  
2 . আবেদনকারী আর্থিকভাবে সক্ষম হতে হবে।
3 . আবেদনকারী কমপক্ষে 21 বছর বয়সী হতে হবে।
4 . যদি তিনি সৌদি আরবে থাকেন আকামার ভ্যালিডিটি থাকতে হবে।
5 . পূর্ববর্তী অপরাধমূলক রেকর্ড থাকতে পারবে না।
6 . কখনো কোন সংক্রামক রোগ সংগ্রামক রোগ ছিল না, এমন একটি মেডিকেল রিপোর্ট উপস্থাপন করতে হবে।/ মেডিক্যাল রিপোর্ট ক্লিন হতে হবে।  

 এছাড়া আরো কিছু সাধারণ শর্ত আছে যে গুলা থাকলে সহজেই পেয়ে যাবেন এই গ্রিন কার্ড।
1 - একটি স্বাতন্ত্র্যসূচক শিক্ষাগত যোগ্যতা।
2 - উচ্চ ডিগ্রী ধারী এবং কোন বিশেষ বিষয়ে দক্ষতা আছে যার।
3- যে সব যোগ্য লোকদের সৌদি আরবে প্রয়োজন।
4- এ দেশ উপকৃত হয় এমন বৈজ্ঞানিক ও ব্যবহারিক ধারনা আছে যার।
5. বিনিয়োগকারীর উচ্চ আর্থিক স্বক্ষমতা
6. দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগ যিনি করতে পারবেন।
7.  যিনি বিনিয়োগ থেকে লাভ করতে চান।
8. সৌদিদের নিয়োগ করে  তিনি এ রাজ্যের মধ্যে একটি কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠিত করতে চান।
9. রাজ্যের অর্থনৈতিক কাজে যিনি অর্থমূল্য যোগ করতে পারবেন।

যারা সবুজ কার্ড পাওয়ার অধিকার রাখে না তাদের যারা প্রবাসী, যারা একটি পেটেন্ট দায়ের করে না, তারা প্রমাণ করে যে তারা কোনও অসদাচরণ করেনি এবং যে কোন ব্যক্তি কোনও অবৈধ বা অপরাধমূলক কাজ করেছে বলে প্রমাণিত হয়নি। বাসিন্দাদের এবং তাদের আত্মীয়রাও সবুজ কার্ডের অধিকারী নয়।

সৌদি গ্রিন কার্ড এবং অন্যান্য দেশের গ্রিন কার্ডের মধ্যে তার পার্থক্যগুলি কি
সৌদি গ্রিন কার্ড প্রবাসিদের কে নাগরিকত্ব দেবে না, তবে স্থায়ী নাগরিকদের মত উপরোক্ত সুবিধা গুলা প্রদান করবে। 
আরেক তথ্য অনুযায়ী এই গ্রিন কার্ডের বাৎসরিক ফি ধরা ১৪২০০ ধরা হতে পারে বলে জানা গেছে।    

No comments

Theme images by Roofoo. Powered by Blogger.